২৮ অক্টোবর, ২০২১ এই তারিখে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ নিয়ে এলেন এক নতুন ঘোষণা। যা নিয়ে এখন পর্যন্ত প্রচুর আলোচনা হয়েছে। ঘোষণাটি ছিল এরকম যে, মার্ক জাকারবার্গ ফেসবুক কোম্পানির নাম বদলে ‘মেটাভার্স’ নাম দিতে যাচ্ছেন, সংক্ষেপে ‘মেটা’৷ এখন কথা হলো ‘মেটাভার্স’ এর অর্থ কী?
মেটা অর্থ ‘Beyond’ বা বাহির আর ‘ভার্স’ হচ্ছে ইউনিভার্স এর সংক্ষিপ্ত রূপ, যার অর্থ মহাবিশ্ব। অর্থাৎ এটি এমন এক ডিজিটাল ব্যবস্থা যা আমাদের বাস্তব দুনিয়ার বাইরে নিয়ে যাবে। আর এরকম বলা হচ্ছে, আগামী ১২ বছরের মধ্যে ১ বিলিয়নের বেশি মানুষ মেটাভার্সে জয়েন করবে৷ মেটাভার্স হবে ত্রিমাত্রিক জগত, যেখানে রিয়েল লাইফের এক্সপেরিয়েন্স নেয়া যাবে৷ মেটাভার্স এর টার্মটি প্রথম ব্যবহার করেছিলেন ১৯৯২ সালে, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী লেখক নিল স্টিফেনসন তাঁর ‘স্নো ক্র্যাশ’ বইতে৷ ফেইসবুক মূলত তার হোল্ডিং নেইম পরিবর্তন করেছে, অ্যাপের নয়৷ এর কারণ কী? কারণ হচ্ছে, এই মেটা ভার্সনের মাধ্যমে মানুষ সামাজিক যোগাযোগ ছাড়াও অন্য সব কাজই করতে পারবে, বাস্তব অভিজ্ঞতা সহ৷ এখন গেমিং ইন্ডাস্ট্রি আর কিছু জায়গায় ভার্চুয়াল রিয়্যালিটির ব্যবহার আছে৷ কিন্তু মেটাভার্সের মাধ্যমে আপনি আপনার নিজের অ্যাভাটার বানাতে পারবেন, যা দিয়ে আপনি যেকোনো জায়গায় যেকোনো মুহূর্তে থাকতে পারবেন ভার্চুয়ালি। আপনি ঘরে বসে থাকলেও বদলে যাবে চারপাশ, মিটিংয়ে না থেকেও সত্যিকার অনুভূতি পাবেন। এর জন্য অবশ্যই প্রয়োজন উচ্চ প্রযুক্তির ডিভাইস, তাই আগামী বছরের মধ্যে আসছে নতুন প্রজেক্ট নাম ‘ক্যাম্ব্রিয়া’। এটি তৈরী করবে ভি আর হেডসেট, এ আর গ্লাস ( অগমেন্টেড রিয়্যালিটি গ্লাস)। যার মাধ্যমে ত্রিমাত্রিক জগতে প্রবেশ করা যাবে৷ এর প্রথম ধাপ হলঃ Horizon Home, ২য় ধাপঃ Horizon World আর ৩য় ধাপঃ Horizon Workroom. যার মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে অফিসে কাজ করার এক্সপেরিয়েন্স নেয়া যাবে একদম বাস্তব দুনিয়ার মতো।
শুধু ফেইসবুক নয়, অন্যান্য টেক জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান গুলোও নিজেদের মেটাভার্স তৈরী করছে। সুতরাং, এ কথা বলা যেতেই পারে আগামী কিছু বছরের মাঝে প্রযুক্তির এক মাইলফলক পেরোতে যাচ্ছে পৃথিবী।