-লুৎফুন নাহার লতা
সুপ্রভা (ছদ্মনাম) আমাদের কাছে তার একটি অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন। তিনি ঢাকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক শ্রেণীর দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। সম্প্রতি তার মেসেঞ্জারে একটি ফেক অ্যাকাউন্ট থেকে কিছু ছবি পাঠানো হয়। সেগুলো সুপ্রভারই তোলা কিছু অন্তরঙ্গ ছবি ছিল। সুপ্রভা ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছেন যে তার গ্যালারি ছাড়া ছবিগুলো শুধুমাত্র তার ছেলে বন্ধুর কাছে ছিল। তবে তিনি এটাও বলেন যে তার বন্ধুটি যথেষ্ট বিশ্বস্ত এবং তিনি বিশ্বাস করেন তার বন্ধু এমন গর্হিত কাজ কখনোই করবেন না। আর এই ব্যাপারটি তিনি সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করে জানিয়েছেন যে তার বন্ধুটির এই ফেক অ্যাকাউন্টের সাথে কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তবে ছবিগুলো ঠিক কী উপায়ে তৃতীয় ব্যক্তিটির হস্তগত হয়েছে তা একরকম ধোঁয়াশাই বটে। সুপ্রভার ভাষ্য মতে তিনি ছাড়া তার মোবাইল ফোনটি আর কারো হাতে যাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। তাই ধারণা করা হচ্ছিল কোনোভাবে তার ছেলে বন্ধুটির মোবাইল থেকেই ছবিগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে।
সুপ্রভাকে সেই অপরিচিত ব্যক্তিটি কিছু টাকার বিনিময়ে ছবিগুলো মুছে ফেলার প্রস্তাব দেন। এক্ষেত্রে যেমন একদিকে ভবিষ্যতেও সেই ব্যক্তিটির পুনরায় সুপ্রভাকে বিরক্ত করার সম্ভাবনা ছিল ঠিক একই রকমভাবে ছবিগুলো এবারেও মুছে ফেলার কোন নিশ্চয়তা ছিলনা। তাই সঠিক কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে তিনি কিছুদিন সময় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ।
এরইমধ্যে সুপ্রভাকে একদিন তার ছেলেবন্ধুটি জানান, “যে ক্লাস এইটে পড়ুয়া তার এক বোনের ছেলে তার মোবাইল থেকেই সুপ্রভার ছবিগুলো নিজের কাছে নিয়েছে এবং গেম খেলার উদ্দেশ্যে সে যে ফেসবুক একাউন্টটি ব্যবহার করতো, সেই একাউন্ট থেকেই সুপ্রভাকে বিরক্ত করতো। সেই গেমের পেছনে খরচ করার উদ্দেশ্যেই মূলত সে টাকার দাবিও করেছিল। আর এই ব্যাপারটি প্রথম দৃষ্টিগোচর হয় বন্ধুটির বোনের।”
সৌভাগ্যবশত খুব ভয়ংকর কোনো মোড় নেওয়ার আগেই পরিস্থিতিটি সামলানো সম্ভব হয়েছে। তবে এ থেকে যেকোনো ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারতো।
একজন মানুষ যতটাই বিশ্বাসপ্রবণ হোন না কেন, প্রকৃতপক্ষে পারিপার্শ্বিক বাস্তবতাকে অনুধাবন করে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব একমাত্র আমাদেরই। অন্য একজন মানুষের বিশ্বস্ততার ওপর নির্ভর করার আগে আমাদের নিজস্ব অবস্থান সুরক্ষিত করাই একান্ত জরুরী। বিশ্বাসের স্তরে পা দেয়ার আগে তাই আত্মসচেতনতার ভীতটুকু মজবুত করার প্রয়োজনীয়তা অন্য যে কোন কিছুকে ছাপিয়ে যায়।